পর্যটকদের জন্য মেরিন ড্রাইভে হলো পরিচ্ছন্ন দুটি টয়লেট

  বিশেষ প্রতিনিধি    01-10-2022    173
পর্যটকদের জন্য মেরিন ড্রাইভে হলো পরিচ্ছন্ন দুটি টয়লেট

বাংলাদেশে ভ্রমণের স্থানগুলোর মধ্যে সব সময়ই পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে থাকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের কক্সবাজার। প্রতিবছর কমপক্ষে ৩০ লাখ পর্যটক সৈকত ভ্রমণ করেন। কিন্তু সৈকতের কোথাও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট না থাকায় সমস্যায় পড়েন পর্যটকেরা। সেই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হাইসাওয়া। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের দুটি স্থানে তারা পাবলিক টয়লেট বানিয়েছে। হাইসাওয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথম ধাপে ৮৪ কিলোমিটারের মেরিন ড্রাইভের দুটি স্থানে পাবলিক টয়লেট স্থাপন করে সংস্থাটি। একটি পাহাড়ি ঝরনার হিমছড়িতে, অন্যটি পাথুরে সৈকত পাটোয়ারটেকে। সম্প্রতি হিমছড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ কয়েকজন পর্যটক হাইসাওয়ার স্থাপিত পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করছেন। টয়লেটে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা টয়লেট চেম্বার রাখা আছে। নারীদের চেম্বারে রাখা হয়েছে ঋতুকালীন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম। স্ত্রী ও স্কুলপড়ুয়া দুই মেয়েকে নিয়ে হিমছড়ি ঝরনা দেখতে এসেছেন কুমিল্লার রাজবাড়ীর ব্যবসায়ী সাইদুল হক (৪৫)। ঝরনাতে গোসল সেরে তিনজন টয়লেটে যান। তারপর তাঁরা পাশের সৈকতে নামেন। সাইদুল হক বলেন, আগেও তাঁরা কক্সবাজারে এসেছেন। তবে সৈকতের পাশে কোথাও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন টয়লেট ছিল না। জেলা পরিষদের দু-একটি টয়লেট থাকলেও সেগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী। এ কারণে দূরের জায়গায় ঘুরতে গেলে টয়লেট নিয়ে নারী ও শিশুদের দুর্ভোগে পড়তে হতো। হাইসাওয়ার পাবলিক টয়লেট সেই দুর্ভোগ কমিয়ে দিয়েছে। তবে মাত্র দুটি টয়লেট হওয়ায় লাইন ধরতে হয়। এমন টয়লেটের সংখ্যা আরও বাড়ানো দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন। টয়লেটের কেয়ারটেকার মো. জসিম উদ্দিন (২২) বলেন, প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ পর্যটক তাদের টয়লেট ব্যবহার করেন। বেশির ভাগই নারী। প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত টয়লেট খোলা রাখা হয়। টয়লেট ব্যবহার শেষে পর্যটকেরা পরিশোধ করেন ৫ থেকে ১০ টাকা। এই টাকায় কেয়ারটেকারের বেতন, টয়লেটের বিদ্যুৎ, পানির বিল, সাবান, টিস্যু ও টয়লেট পরিষ্কারের সামগ্রী কেনা হয়। হিমছড়ি থেকে পাটোয়ারটেক সৈকতের দূরত্ব প্রায় ২৮ কিলোমিটার। সেখানকার টয়লেটের কেয়ারটেকার আজিজুর রহমান (৫৫) বলেন, দিনে প্রায় ৪০০ মানুষ টয়লেটটি ব্যবহার করেন। নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকায় তাঁদের সুবিধা হয়। হাইসাওয়ার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল ওসমান প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৮ সাল থেকে কাজ শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ইতিমধ্যে হাইসাওয়া দেশের ২৭ জেলায় ১ কোটির বেশি মানুষকে হাইজিন, স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানির সেবা দিয়েছে। জনসমাগমের স্থান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টয়লেট না থাকায় নারী ও প্রতিবন্ধীদের ভুগতে হয় সবচেয়ে বেশি। তাই পাবলিক প্লেস, ট্যুরিস্ট স্পট, হাট-বাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাবলিক টয়লেট স্থাপনের কাজ হাতে নেয় হাইসাওয়া। গত ৪ বছরে শুধু কক্সবাজারেই ১৫৬টি পাবলিক টয়লেট স্থাপন করেছে তারা। সুত্র: প্রথম আলো

পর্যটন-এর আরও খবর