ঈদগাঁওতে কারিগরী শিক্ষার অভাবে বাড়ছে গ্রামাঞ্চলে বেকারত্বের সংখ্যা

  বিশেষ প্রতিনিধি    27-10-2022    179
ঈদগাঁওতে কারিগরী শিক্ষার অভাবে বাড়ছে গ্রামাঞ্চলে বেকারত্বের সংখ্যা

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্টান সমুহে কারিগরী কোর্স চালু না থাকায় বহু শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান হচ্ছেনা। এতে গ্রামীন জনপদে বেকারত্বের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার কারিগরী শিক্ষার প্রতি বিশেষ নজর দিলেও জেলা শহর ও পাশ্বর্বতী এলাকার তুলনার ঈদগাঁওর শিক্ষা প্রতিষ্টান সমুহের কারিগরী শিক্ষার চিত্র ভিন্ন। পাশ্বর্বতী রামু-চকরিয়ার মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্টান সমুহে ভোকেশনাল কোর্স ও আলাদা কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্টান থাকলেও ঈদগাঁওর ডজনাধিক শিক্ষা প্রতিষ্টানে উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ভোকেশনাল কোর্স চালু নেই। আলাদা কারিগরী প্রতিষ্টানও নেই। যার কারনে কারিগরী শিক্ষার অভাবে বাড়ছে গ্রামীন জনপদে বেকারত্বের সংখ্যা।

জানা যায়, উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্টান ঈদগাঁও আলমাছিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা, ঈদগাঁও রশিদ আহমদ কলেজ। এসব প্রতিষ্ঠানে কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা নেই। তবে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতন, নাপিত খালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়,পোকখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও গোমাতলী উচ্চ বিদ্যালয়। এ প্রতিষ্ঠানে কারিগরী ভোকেশনাল কোর্স নেই।

পালাকাটা গোলজার বেগম দাখিল মাদ্রাসা,খোদাইবাড়ী এজি লুৎফুল কবির বালিকা মাদ্রাসা,মেহেরঘোনা শাহ জব্বারিয়া দাখিল মাদ্রাসা,ভোমরিয়াঘোনা হাজী শফিক দাখিল মাদ্রাসায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী সাধারণ শিক্ষা গ্রহণ করছে। এ কোর্স চালু না থাকায় সম্ভাবনাময়ী অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীদের ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও মেডিকেল,প্রকৌশল এবং কারিগরি শিক্ষার উচ্চ স্তরে যেতে পারছেনা।

বিদ্যমান উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান ও দাখিল মাদ্রাসা সমূহের কোনটিতে ভোকেশনাল কোর্স চালু নেই। যার কারণে ঘনবসতিপূর্ণ ঈদগাঁও উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের সমন্বয়ে বৃহত্তর ঈদগাঁও এলাকার হাজার হাজার শিক্ষার্থী উপ যুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেনা। কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় এসএসসি, দাখিল, এইচএসসি, আলিম,স্নাতক বা ফাজিল পাস করে কর্মসংস্থানের অভাবে অকালে ঝরে পড়ে।কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করতে ইচ্ছুক তাদেরকে দূরবর্তী স্থানে গিয়ে লেখাপড়া করতে হচ্ছে।

ঈদগাঁও উপজেলাটি সদর থেকে আনুমানিক ৩৩ কিলোমিটার দূরে। নিম্ন-মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীরা আত্মনির্ভরশীল স্বাবলম্বী হতে অনেক সময় দূরবর্তী প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব নয়। তাছাড়া প্রথাগত ও পূঁথিগত শিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিযোগিতা মুলক চাকরির বাজার থেকে অনেকাংশে ঝরে যাচ্ছে। চাকরী অভাবে বেকারত্ব হয়ে অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।

এলাকার সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান ও বিশ্ববাজারে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। কারণ এ শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে তারা নিজেদের দক্ষ ও যোগ্য করে তুলতে পারবে। এই শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হলে এলাকায় বেকারের সংখ্যা অনেকাংশে কমে যাবে। বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষিতরা দেশ এবং সমাজের উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করতে পারবে। এসব বিবেচনা করে এলাকাতে ভোকেশনার কোর্স চালুর দাবী জানান ঈদগাঁও ঐক্য পরিবার নেতৃবৃন্দরা।

ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতন শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান, নতুন ঈদগাঁও উপজেলার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভোকেশনাল কোর্স নেই। যদি কারিগরী শিক্ষা চালু হয়, তাহলে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এটিই বাস্তবায়ন হলে শিক্ষার্থীরা চাকরীর বাজারে নিজেদের দক্ষও যোগ্য করে তুলতে পারবে।

সারাদেশ-এর আরও খবর