এপ্রিলে শেষ হচ্ছে কক্সবাজার রেললাইনের কাজ

  বিশেষ প্রতিনিধি    21-10-2022    165
এপ্রিলে শেষ হচ্ছে কক্সবাজার রেললাইনের কাজ

কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ৪১ কিলোমিটার এখন দৃশ্যমান। আগামী বছরের (২০২৩) এপ্রিলেই শেষ হচ্ছে এ প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ প্রকল্পের জন্য সময়সীমা থাকলে নির্ধারিত সময়ের আগে তা শেষ হওয়ার কাজ জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কক্সবাজার অংশে ৫১ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে ৪১ কিলোমিটার শেষ হয়েছে। বাকি ১০ কিলোমিটার শেষ হবে এপ্রিলের মধ্যেই। এরই মধ্যে ২০টি ব্রিজ ও ১০৬ টি কালভার্ট নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে। শতাংশের ক্ষেত্রে প্রকল্পের ৭২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ২৮ শতাংশ কাজ শেষ হলেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে সমুদ্র শহর কক্সবাজারে ট্রেন আসবে।

দোহাজারি কক্সবাজার রেলওয়ে প্রজেক্টের ম্যানেজার (ইএমডি) আকরামুজ্জামান ডিউজ জানিয়েছেন, দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন। দুটি অংশে চলছে এই রেলপথ নির্মাণের কাজ। তার মধ্যে কক্সবাজার অংশে হচ্ছে ৫১ কিলোমিটার রেলপথ। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে ৪১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের সব ধরণের কাজ। এখন এই রেল লাইনে লোকট্র্যাক, পরিদর্শন ট্রলি ও লোকোমোটিভ দিয়ে চলছে পরীক্ষামূলক শেষ পর্যায়ের কাজ। আর বাকি ১০ কিলোমিটার মাটির ভরাটের কাজ শতভাগ শেষ। এখন চলছে সাব ব্যালাস্ট ও রেললাইন নির্মাণের কাজ।

দোহাজারি কক্সবাজার রেলওয়ে প্রজেক্টের সিনিয়র ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ারিং রাসেল মিয়া জানান, প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার সময়সীমা ২০২৪। কিন্তু ২০২৩ সালে এপ্রিল মাসে এ কাজ শেষ হবে। চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১শ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে প্রথমে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। পরে ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা করা হয়।

দোহাজারি কক্সবাজার রেলওয়ে প্রজেক্টের সিনিয়র ম্যানেজার মো. আনোয়ার হোসাইন জানান, রেললাইনের বনাঞ্চলের ভেতরে হাতি চলাচলের জন্য দুটি আন্ডারপাসের কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের সবগুলোর সেতুর স্প্যান ও পিলারের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজারে ঝিনুকের আদলে একটি আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন ভবন নির্মিত হচ্ছে। এর কাজও শেষ হয়েছে ৬৫ টি শতাংশ। ৬তলা এ ভবনে সব ধরনের সুবিধা রাখা হবে।

সহকারী প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবুল কালাম জানান, কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পে ৯টি স্টেশন বিল্ডিংয়ের মধ্যে লোহাগাড়া ছাড়া অন্য ৮টি স্টেশন বিল্ডিংয়ের কাজ চলছে। এরমধ্যে দোহাজারী স্টেশন বিল্ডিংয়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে। দোহাজারী এবং চকরিয়ায় সিনিয়র উপ সহকারী ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ি থাকবে। প্রতিটি স্টেশনে তিনজন স্টেশন মাস্টারের বাড়ি থাকবে। চকরিয়া-হারবাং স্টেশনের ছাদও হয়ে গেছে। কক্সবাজার স্টেশনের কাজ চলছে পুরোদমে। দৃষ্টিনন্দন এই স্টেশনের অধিকাংশ কাজ শেষ হয়েছে। কক্সবাজার স্টেশনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ১৭টি বিল্ডিংয়ের কাজ চলছে। সবগুলো স্টেশনের কাজ হয়েছে। এখন মূল প্রকল্পের ৭২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

সমুদ্র শহর কক্সবাজারের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ স্থাপন করতে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ বাস্তবায়নের জন্য সরকার উদ্যোগ নেয়। ২০১৭ সালে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৩৯টি সেতুসহ রেলপথ নির্মাণের চুক্তি হয়। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন (সিসিইসিসি) ও দেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড পৃথক দুই লটের কার্যাদেশ পায়।

সারাদেশ-এর আরও খবর