রোহিঙ্গা ডাকাতদের মুক্তিপণ দিয়ে ফিরলেন অপহৃত স্কুল ছাত্র

  বিশেষ প্রতিনিধি    27-10-2022    149
রোহিঙ্গা ডাকাতদের মুক্তিপণ দিয়ে ফিরলেন অপহৃত স্কুল ছাত্র

টেকনাফের হ্নীলা পাহাড়ি এলাকায় ধানক্ষেত থেকে অস্ত্রের মূখে দুই ভাইকে অপহরণ করেছিল রোহিঙ্গা ডাকাত দলের সদস্যরা। পরে ডাকাত দলের দাবী করা মুক্তিপণের দুই লাখ টাকা দেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

তারা হলো, স্কুল ছাত্র নুর হোসেন(১৬) ও তার বড় ভাই ছৈয়দ হোসেন(১৯)। তারা দুইজন উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী এলাকার বাসিন্দা ফরিদ আলমের ছেলে ও নুর হোসেন লেদা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।

ভূক্তভোগি পরিবারের দাবি, এঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ থানায় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অপহ্নত নুর হোসেনকে মারধর করার পর একজনের মাধ্যমে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে নুর হোসেনকে ছেড়ে দিয়েছে।

বুধবার দুপুর দুইটার দিকে মুক্তিপণের দাবি করা টাকা দেওয়ার পর নুর হোসেনকে ছেড়ে দিয়েছেন রোহিঙ্গা ডাকাতরা।

এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন ভূক্তভোগীর ও অপহৃতের বড় ভাই ছৈয়দ হোসেন এবং হ্নীলা ইউপির ৭নং ওয়াডের ইউপি সদস্য জামাল হোসেন।

ইউপি সদস্য জামাল হোসেন বলেন, নবী হোসেন ডাকাতের মাধ্যমে মুক্তিপণের দাবী করা টাকা দেওয়ার পর স্কুল ছাত্র নুর হোসেনকে ছেড়ে দিয়েছে। তবে ঘটনার পর ভুক্তভোগীর পরিবার টেকনাফ থানায় একটি অভিযোগ করেছিলেন।

ভূক্তভোগীর ও অপহৃতের বড় ভাই ছৈয়দ হোসেন বলেন,গত রোববার (২৩ অক্টোবর) পাহাড়ের পাদদেশে ধানক্ষেত পাহারা দিতে গেলে রাত ১টার দিকে রোহিঙ্গা অস্ত্রধারী ডাকাতরা (আমি) ছৈয়দ হোসেন ও ছোট ভাই নুর হোসেনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং রশি দিয়ে বেঁধে ফেলেন।

পরে (আমি) ছৈয়দ হোসেন অসুস্থ বললে ডাকাত দল আমাকে ছেড়ে দেয় এবং ছোট ভাই নুর হোসেনকে তাদের সঙ্গে নিয়ে যান। তখন তার মুক্তিপণ হিসেবে ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন এবং দাবি করা টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাকে ছেড়ে দেন। বাড়িতে এসে পরিবারের সদস্যদের জানায়।

এরপর পাহাড় থেকে এসে প্রথমে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানকে অবহিত করলে তারা দুজন বিষয়টি অভিযোগের মাধ্যমে টেকনাফ থানা পুলিশকে জানানোর পাশাপাশি একটি অভিযোগ দেওয়া হয়। তবে অবশেষে নিরুপায় হয়ে বুধবার দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে নুর হোসেনকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে।

হ্নীলার ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, বিয়ষটি শুনেছি। ওই পাহাড়ে রোহিঙ্গা ডাকাত দলের অবস্থান রয়েছে। এর মধ্যে আরও দুই-তিনটি ঘটনা ঘটেছে। সেসব ঘটনায় মুক্তিপণ আদায়ের মাধ্যমে অপহৃতদের ছেড়ে দিয়েছিল।

জানতে চাইল টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, বিয়ষটি নিয়ে পুলিশের একটি দল কাজ করছে। তবে নিজেদের মধ্যে কোনো ঘটনাকে আড়াল করতে আত্মগোপন করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য এসব ঘটনা কিনা তদন্ত করা হচ্ছে। নাকি মাদক সংক্রান্ত বিষয়ের লেনদেন কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এর আগে গত ১অক্টোবর মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলেন টেকনাফের হ্নীলার দুই কৃষক নজির আহমদ (৫০) ও তাঁর ছেলে মোহাম্মদ হোসেনকে (২৭)। তাদের ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা।

সারাদেশ-এর আরও খবর