বাংলাদেশে কোনও আরাকান আরসা নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  বিশেষ প্রতিনিধি    11-10-2022    149
বাংলাদেশে কোনও আরাকান আরসা নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ কোনও বিদেশি সন্ত্রাসী গ্রুপকে আশ্রয় বা প্রশ্রয় দেয় না। বাংলাদেশে কোনও আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) নেই। সোমবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন। ড. মোমেন বলেন, তাদের (মিয়ানমার) ওখানে যথেষ্ট সংঘাত হচ্ছে। সংঘাতের সময় আমাদের দিকেও এসে গোলাগুলি করে। আমাদের এলাকার কিছু লোক আতঙ্কিত। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা বার বার মিয়ানমার সরকারকে বলেছি, যে এটা আইন বিরুদ্ধ। তারা সবসময় আমাদের আশ্বাস দিয়ে যায়। তবে অনেক কিছু হয়ত তাদেরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আমাদের দেশে কোনও আরসা নেই। আমরা এ ধরনের গ্রুপকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিই না। সীমান্তে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ চিন্তিত কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা নিয়ে আমরা যথেষ্ট চিন্তিত। গত মাসে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের সঙ্গে বসেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। সে সময় চীনা রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন, এ সমস্যার কথা বেইজিংয়ে জানাবেন। এ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিশ্বাস তারা জানিয়েছে। জানালেই যে তারা ম্যানেজ করতে পারবে…ওখানে এখন জটিল পরিস্থিতি। মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা কাজ করি। আমরা এমন কোনও কাজ করতে চাই না যাতে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। এ কারণে আমরা ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি করি। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সোমবার ব্রিটিশ নতুন পররাষ্ট্র-সচিব জেমস ক্লেভারলির সঙ্গে তার মিয়ানমার পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি বলেছি আপনারা রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য করছেন, এটা যথেষ্ট নয়। এখন পর্যন্ত একটা রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি। আপনাদের আরও ভূমিকা রাখতে হবে। তাকে বলেছি, বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে; আপনারা মিয়ানমারে যথেষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ করেছেন। মোমেন বলেন, আপনারা মিয়ানমারের কয়েকজন জেনারেলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। কিন্তু আপনাদের বিনিয়োগ মিয়ানমারে বেড়েছে, এটি দুঃখজনক। এটি গ্রহণযোগ্য নয়। এতে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ হয় না। সীমান্তে প্রাণহানি দুঃখজনক, ভারতের জন্য লজ্জার সীমান্তে দুই বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সর্বোচ্চ পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার পরও সীমান্তে মানুষ হত্যার ঘটনা ঢাকার জন্য দুঃখজনক আর নয়াদিল্লির জন্য লজ্জাজনক। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। কদিন পরপর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মানুষ মারা যায়। যদিও এটা সর্বোচ্চ পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা একটি লাশও বর্ডারে দেখতে চাই না। কিন্তু তারপরও দুর্ঘটনা ঘটে। মোমেন বলেন, আমি প্রায়ই বলে থাকি, আগেও বলেছি; এটি (সীমান্তে হত্যা) আমাদের জন্য দুঃখজনক আর ভারতের জন্য লজ্জাজনক। কারণ তারা তাদের ফোর্সকে যদি নিয়ন্ত্রণে না রাখে… ভারতের মতো একটি শক্তিশালী, উন্নত, পরিপক্ব গণতন্ত্রের দেশ; তারা যদি তাদের লোকগুলোকে (বিএসএফ) নিয়ন্ত্রণে না রাখে, এটি তাদের জন্য লজ্জাজনক। শনিবার দিবাগত রাতে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হন। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গার বলদিয়া সীমান্তে মুনতাজ হোসেন নামে একজন এবং সাতক্ষীরার খৈতলা সীমান্তে মো. আবু হাসান নামে একজন মারা যান।

জাতীয়-এর আরও খবর