টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক দিনে ১১ শিশুর জন্ম

  বিশেষ প্রতিনিধি    30-09-2022    124
টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক দিনে ১১ শিশুর জন্ম

কক্সবাজারের টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক দিনে স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে প্রসূতিরা ১১ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এর মধ্যে ছয়জন মেয়ে ও পাঁচজন ছেলে। নবজাতক, প্রসূতি—সবাই সুস্থ আছেন। বুধবার সকাল ছয়টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত এই শিশুদের জন্ম হয় বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল। তিনি বলেন, ২০২০ সালে ১৫ জানুয়ারি স্বাভাবিক সন্তান প্রসব কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক দিনে এটিই সর্বোচ্চ স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের ঘটনা। এর আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক দিনে সর্বোচ্চ সাত প্রসূতি স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও মিডওয়াইফ নার্সদের আন্তরিকতা ও দক্ষতার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে প্রসূতিরা নবজাতকদের নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন। জন্ম নেওয়া ১১ শিশুকে হাসপাতালের পক্ষ থেকে জামা-কাপড়, মশারি ও প্রসূতিদের জন্য উপহার বক্স পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০৯টি স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে ৬৯৮ জন, ২০২০ সালে ৫২৫ জন, ২০২১ সালে ৫৪৭ জন নারী এখানে স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্ম দেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান সেকশন চালু হয় ২০২০ সালে। ওই বছর সিজারিয়ানের মধ্যে ৭৭ জন, ২০২১ সালে ১১৮ জন ও চলতি বছরের এ পর্যন্ত ১১৪ জন নারী সন্তান প্রসব করেছেন। ১৯৮৩ সালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠা হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও নার্সরা বলছেন, সিজারিয়া অস্ত্রোপচারের নামে বাণিজ্য, দালাল চক্র ও অদক্ষ ধাত্রীর হাত থেকে প্রসূতিদের রক্ষায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নেতৃত্বে কয়েক চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের কাজ শুরু করা হয় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসবে প্রসূতিদের উদ্বুদ্ধকরণসহ বিভিন্ন কৌশলও কাজে লাগান তাঁরা। ফলে হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসবের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ ছাড়া হাসপাতালটিকে শিশুবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আবাসিক চিকিৎসক এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, পুরো উপজেলার গর্ভবতী মায়েদের ডেটাবেজের মাধ্যমে তাঁদের সরাসরি ফোনে খোঁজখবর নেওয়া হয় এবং প্রসব-পূর্ববর্তী চিকিৎসা ও পরামর্শ দেওয়া হয়। ফলে নিয়মিত স্বাভাবিক প্রসবের সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালে নিরাপদে স্বাভাবিক প্রসব হলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে না। পাশাপাশি কোনো প্রকার অর্থও ব্যয় হয় না। সবার সহযোগিতা পেলে স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন কক্সবাজারের সিভিল সার্জন মাহবুবুর রহমান।

সারাদেশ-এর আরও খবর